কক্সবাজার, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

শুধু চা-রুটি দিয়ে রমজান উদযাপন করছে আফগান পরিবারগুলো

আফগানিস্তানের অর্থনীতি ভেঙে পড়ায়, অনেক আফগান পরিবার শুধু চা ও রুটি দিয়েই রমজান উদযাপন করছে। ২০২১ সালের আগস্টে তালেবান দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে জীবনযাত্রার ব্যয় ও খাবারের দাম আকাশচুম্বী হয়েছে। অন্যদিকে, বিভিন্ন বিধিনিষেধের কারণে অনেক প্রাপ্তবয়স্ক আফগান বেকার হয়ে পড়ে। আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতিসংঘের মতে, প্রায় ২৮ মিলিয়ন আফগান নাগরিক বা জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশ বেঁচে থাকার জন্য সাহায্যের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু এখন সেই সাহায্য সীমিত, কারণ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো তালেবান শাসনের অধীনে তাদের কার্যক্রম স্থগিত করেছে।

আফগানিস্তানের অর্থনীতি ভেঙে পড়ায়, অনেক আফগান পরিবার শুধু চা ও রুটি দিয়েই রমজান উদযাপন করছে।
আফগানিস্তানের অর্থনীতি ভেঙে পড়ায়, অনেক আফগান পরিবার শুধু চা ও রুটি দিয়েই রমজান উদযাপন করছে।
একজন সাবেক নারী মানবাধিকার কর্মী ও কাবুলের একটি কিন্ডারগার্টেনের প্রধান শামসিয়া হাসানজাদা বলেন, ‘আগে আমরা ইফতার ও সেহরি তৈরি করতাম শুধু নিজেরা নয়, নিরাপত্তা কর্মী ও আমাদের আশেপাশে বসবাসকারীদের নিয়েও ইফতার করা হতো। কিন্তু এখন আমাদের কিছুই নেই। শুধুমাত্র গ্রিন-টি ও শুকনো রুটি ছাড়া।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার পরিবারের পাঁচ সদস্য কাজ করত। কিন্তু এখন একজনই কাজ করছেন এবং তার আয় আমাদের পরিবারের চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট নয়।’

২০২১ সালের আগস্টে তালেবান দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে জীবনযাত্রার ব্যয় ও খাবারের দাম আকাশচুম্বী হয়েছে।
২০২১ সালের আগস্টে তালেবান দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে জীবনযাত্রার ব্যয় ও খাবারের দাম আকাশচুম্বী হয়েছে।
কাবুলের বাসিন্দা মোহাম্মদ নাঈম বলেন, ‘২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী প্রত্যাহারের পর থেকে, দেশটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ ছিল কিন্তু অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আমাকে সেই আনন্দ উপভোগ করতে দেয়নি। বাড়িতে অনেক আর্থিক সমস্যার কারণে গত দুই বছরে নিজের জন্য এক টুকরো পোশাক তৈরি করতে পারিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘গত কয়েক মাস পেনশন পাচ্ছি না। আগে আমরা ইফতার ও সেহরিতে বিভিন্ন ধরনের খাবার রাখতাম, কিন্তু এখন আমাদের কোনো খাবার নেই।’

২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী প্রত্যাহারের পর থেকে, দেশটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ ছিল
২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী প্রত্যাহারের পর থেকে, দেশটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ ছিল
আরেক নারী মানবাধিকার কর্মী কারিশমা নাজারি বলেন, ‘সারাদিন রোজা রাখা এবং তারপরে ইফতার ও সেহরির জন্য কিছুই না থাকা আমার ও বেশিরভাগ আফগান পরিবারের জন্য খুব কঠিন ও বেদনাদায়ক। আমাদের বেশিরভাগেরই গ্রিন টি ছাড়া আর কিছুই নেই।’

উল্লেখ্য, তালেবানরা ২০২১ সালে দেশটির দখল নেয়। এরপর দেশে ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়। দেশে বেকারত্ব ও ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্যের কারণে গত দুই বছরে দেশের অনেক যুবক অবৈধভাবে দেশ ছেড়ে পাড়ি জমাচ্ছেন।

পাঠকের মতামত: